29 Jul 2025

৩ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছে ববিয়ানরা

  



আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান,

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) এর শিক্ষার্থীরা ৩দফা দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের এক উন্মুক্ত আলোচনার পর এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

 

উত্থাপিত ৩ দফা হলো:-

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন(হল, একাডেমিক বিল্ডিং, অডিটোরিয়াম) নিশ্চিত করা।

২.জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন বৃদ্ধি করা।

৩.নিরাপদ পরিবহন পুল নিশ্চিত করা।

 

দক্ষিন অঞ্চলের মানুষদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য ২০১১ শালে প্রতিষ্ঠিত হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই যেনো সরকারের সকল অবহেলা এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতি।

দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন উন্নতি হয়নি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা।

 

বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমানে ১৩ তম ব্যাচের আবর্তন চলছে। এর মধ্যে ৮ টি ব্যাচের স্নাতক ডিগ্রী শেষ এবং ৫ টি ব্যাচ বর্তমানে অধ্যায়নরত রয়েছে। অধ্যায়নরত ৫টি ব্যাচের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার যার।এই ১১ হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ টি বিভাগে পড়াশোনা করছেন।কিন্তু এই ২৫ টি ডিপার্টমেন্টের বিপরীতে শ্রেনি কক্ষের সংখ্যা রয়েছে মাত্র ৩৬ টি।যার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস রুমের বাইরে তাল তলাতেও ক্লাস নিতে দেখা গেছে

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।

 

শুধু শ্রেনী কক্ষ সংকটই নয়,বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১হাজার শিক্ষার্থী বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ২১০ জন, যেটি চাহিদার ৪২.৬% আবার এই ৪২% এর ২৫% ই উচ্চতর শিক্ষার জন্য শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন।কিন্তু ২৫ টি বিভাগের জন্য অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ৪৯৩ জন শিক্ষক থাকার কথা।কিন্তু ইউজিসি অনুমোদন দিয়েছে ২৬৬ জন নিয়োগের জন্য। ফলে শিক্ষক সংকটের কারনে প্রায়ই ক্লাস ক্যানসেল হয় যা শিক্ষার্থীদের সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে শিক্ষা অর্জনে বাধা প্রদান করে ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অনার্স প্রোগ্রাম ৪ বছর মেয়াদি হলেও শিক্ষার্থীদের এটা শেষ করতে ৫ কিংবা সাড়ে ৫ বছর পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগারের রিডিং রুম।কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগারের রিডিং রুমে সিট রয়েছে মাত্র ১৫০ টি যা একেবারে নগন্য। যার ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

 

এদিকে আবাসন ব্যবস্থারও বেহাল দশা।১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য হল রয়েছে মাত্র ৪ টি এবং এই ৪টি হলে মোট আসন রয়েছে মাত্র ২ হাজার।পরিবহনেও নেই কোনো উন্নয়ন,শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস রয়েছে মাত্র ৯ টি এবং বিআরটিসির ১০ টি ভারা কৃত বাস দিয়ে চলছে পরিবহন পুলের কার্যক্রম।

 

এখন প্রশ্ন হলো একটা বিভাগীয় পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনো এই বেহাল দশা? বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নাজুক অবস্থার জন্য দায়ী কি?

উত্তর হলো বাজেট এবং সরকারের সুনজরের অভাব।

 

চলতি অর্থ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বাজেট পেয়েছে ২৮৪০ কোটি টাকা সেখানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বাজেটই পায়নি অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য। বাজেটের অভাবে হচ্ছে না নতুন কোনো একাডেমিক ভবন।ববি জন্মের পর থেকেই ৬ তলা বিশিষ্ট মাত্র ২ টি ভবনে হচ্ছে এর শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা।

 

শিক্ষকের অভাব থাকলেও, ২৬৬ জন পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন থাকলেও নতুন শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব হচ্ছে না। এর পিছনে রুম সংকট কে অনেকে দায়ী করছেন। ৪-৫ জন শিক্ষকের জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ১টি রুম যেটা আসলে দুঃখের বিষয়। অন্যদিকে একাডেমিক বিল্ডিং এ জায়গা না হওয়ায় সমাজকর্ম বিভাগের জায়গা হয়েছে কেন্দ্রীয় পাঠাগার ভবনের এক ফ্লোরে।শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের দাবি এই সকল সমস্যার সমাধান হতে পারে যদি যথাপুযুক্ত বাজেট পাওয়া যায়।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: