15 Aug 2025

আজ ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী

 

আজ ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোড়ের বাড়িতে সপরিবারে নিহত হন তিনি। তার দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি নেই।১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। তার বাবা শেখ লুৎফর রহমান, মা সায়েরা খাতুন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের মতো রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। এসব নেতার সাহচার্যে তিনি নিজেকে ছাত্র-যুবনেতা হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করেন।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত বিভাগ-পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে শেখ মুজিব ছিলেন তরুণ ছাত্রনেতা। পরে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। সমাজতন্ত্রের পক্ষসমর্থনকারী একজন অধিবক্তা হিসেবে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। শেখ মুজিবুর রহমান তার রাজনৈতিক জীবনে প্রায় ১৩ বছর কারাভোগ করেন। জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছয় দফা স্বায়ত্তশাসন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন, যাকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনা হিসেবে ঘোষণা করেছিল।

ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রধান দাবি ছিল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, যার কারণে তিনি আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের অন্যতম বিরোধী পক্ষে পরিণত হন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে প্রধান আসামি করে আগরতলা মামলা করা হয়; তবে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের কারণে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করা সত্ত্বেও তাকে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

ধানমন্ডি ১৫ আগস্ট ঘিরে

কড়া নিরাপত্তা : রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় ১৫ আগস্ট কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ এ এলাকায় মোতায়েন করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নাশকতা ঠেকাতে এই বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ৩২ নম্বর এলাকার প্রবেশপথগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন ও পথচারীর চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

এ বিষয়ে রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) জিসানুল হক বলেন, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে ৩২ নম্বর এলাকায় নিিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার যেন অবনতি না হয়, সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে। আমাদের কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে।

কোনো হুমকি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো সেরকম কোনো আশঙ্কা দেখি না। আমাদের পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন আছে।

রাজধানীতে ফানুস ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা : রাজধানীতে ফানুস ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নম্বর-ওওও/৭৬)-এর ২৮ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে ১৪ আগস্ট রাত ১১টা থেকে ১৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় যেকোনো প্রকার ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হলো। নগরবাসীকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

ধানমন্ডি ৩২-এ আওয়ামী লীগ সমর্থক সন্দেহে আটক ৩ : রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থান নেয় ছাত্র-জনতা। অবস্থানকালে সেখানে উপস্থিত তিন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ কর্মী সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনায় ঘটে। এ সময় উপস্থিত ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বলা হয়, শেখ হাসিনার ছেলে জয় ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ৩২ নম্বরে অবস্থান নিতে বলেছেন। তবে আওয়ামী লীগের কর্মীরা যাতে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে সেজন্য ছাত-জনতা অবস্থান নিয়েছে।

জানা গেছে, এক ব্যক্তি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এসে ভিডিও কলে কেউ একজনকে পরিস্থিতি দেখাচ্ছিলেন। এ সময় ভিডিও কলের বিপরীত পাশে থাকা ব্যক্তির ফোনের ক্যামেরায় শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের ছবি দেখা গেলে উপস্থিত ছাত্র-জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পিটুনি দেয়। পরে পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে সেই স্থান ত্যাগ করেন।

ছাত্র-জনতার একজন বলেন, গতকাল শেখ হাসিনার ছেলে জয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ৩২ নম্বরে অবস্থান নিতে বলেছেন। তাই আওয়ামী লীগের কর্মীরা যাতে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে সেজন্য আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তি আওয়ামী লীগের দোসর। তার ফোনে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। তাকে আমরা ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।

এর কিছুক্ষণ পর রাত ৯টার দিকে আরেকজনকে গণপিটুনি দিতে দেখা যায়। এ সময় পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তবে কী কারণে তাকে আওয়ামী লীগ কর্মী বলা হচ্ছে সে বিষয়ে কেউ ঠিকমতো জানাতে পারেননি।

এ সময় উপস্থিত জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তারা বলে, আওয়ামী লীগের দালালরা হুঁশিয়ার সাবধান, জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই কর।

এ বিষয়ে রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম আটকের বিষয়ে জানান, এখানে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা তাদের ফোন চেক করব। জিজ্ঞাসাবাদও করব। যদি তারা নির্দোষ হয়, নিরীহ হয় তাহলে ছেড়ে দেব। দোষী হলে ব্যবস্থা নেব।

bkash cash can (300x250) 15-05-24

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: